Pages

Saturday, June 3, 2017

সিসিটিভি লাগানোর হার অনেক বেড়েছে

সিসিটিভি লাগানোর হার অনেক বেড়েছে


সিসিটিভি ক্যামেরা সিষ্টেম এর ব্যবহার আমাদের দেশে দশ-পনের বছর আগে শুরু হলেও পশ্চিম দেশগুলোতে আরো বহু আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যদিও সিসিটিভি ক্যামেরা সিষ্টেম তখন ছিল শুধু সাদা-কালো, এসব ক্যামেরায় অল্প আলোতেই পরিষ্কার ছবি দেখা যেত। পরবর্তিতে রঙ্গীন ক্যামেরা বাজারে আসলেও স্বচ্ছ ছবির জন্য প্রচুর আলোর প্রয়োজনীয়তার কারনে ব্যবহার সীমিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে অনেক কম আলোতেই রঙ্গীন ক্যামেরায় পরিষ্কার ছবি দেখতে পাওয়া যায়। ফলে এখন আর সাদা-কালো সিসিটিভি ক্যামেরা বা সিষ্টেম উৎপাদন হচ্ছেনা। বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী দুই ধরনের রঙ্গীন সিসিটিভি মনিটরিং সিষ্টেম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ষ্ট্যান্ড এ্যালোন এমবেডেড ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার) সম্বলিত সিসিটিভি মনিটরিং সিষ্টেম এবং পিসি বেজড সিসিটিভি মনিটরিং সিষ্টেম। ব্যবহারের ভিন্নতার কারনে বর্তমানে রঙ্গীন সিসিটিভি ক্যামেরা বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমনঃ সাধারন ক্যামেরা, ডোম ক্যামেরা, হিডেন ক্যামেরা, স্পাই ক্যামেরা, স্পীড ডোম পিটিজেড ক্যামেরা, ডে-নাইট ক্যামেরা, জুম ক্যামেরা, ভেন্ডাল প্রুফ ক্যামেরা এবং আই পি ক্যামেরা উল্লেখযোগ্য। 

সন্ত্রাসী হামলা ও বাসাবাড়িতে ঢুকে সাম্প্রতিক কয়েকটি খুনের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বাংলা নগরবাসীর মধ্যে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর হিড়িক পড়েছে। এ ধরনের ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন আবাসিক এলাকার সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সিসি টিভি ক্যামেরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলছে বেচাকেনার ধুম। ডিজিটাল সিকিউরিটি ওয়ার্ল্ড-এর কর্ণধারের মতে, বর্তমানে সিসিটিভির স্বর্ণযুগ চলছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুধু বাড়ি বা অফিস-আদালতই নয়, ছোটো ছোটো হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। 

বাংলাদেশ : তোপখানা রোডের বৈশাখী রেস্তরাঁর ম্যানেজার মো. সেলিম জানান, নিরাপত্তাই মূল কথা এখন। এ জন্যই আমরা সিসিটিভি লাগিয়েছি। এদিকে গত ১৮ই নভেম্বর প্রকাশকদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকা জেলা প্রশাসন। বৈঠকে গুরুত্বের সঙ্গে সিসিটিভির বিষয়টি আলোচনায় আসে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সদরঘাট থেকে বাংলাবাজার পর্যন্ত প্রধান রাস্তাগুলোতে সিসিটিভি লাগানো কার্যক্রম শুরু হয়। এরই মধ্যে ওইসব এলাকায় ১৬টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, দোকানের ভেতরে সিসিটিভি লাগানোর জন্য দোকান মালিক সমিতিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন বলেন, প্রকাশক দীপন খুন হওয়ার পর থেকে আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের জীবনের হুমকি রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠানেরও নিরাপত্তার বিষয় আছে। তাই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এটা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বায়তুল মোকাররম মার্কেট ও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সিসিটিভি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বনিম্ন সাড়ে ১২শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকায় সিসি ক্যামেরা কেনাবেচা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, তাইওয়ান, চীন ও হংকংসহ বেশকিছু দেশ থেকে সিসিটিভি আমদানি করছেন তারা। সিসিটিভি বিক্রি প্রতিষ্ঠান ক্যামেরা মিউজিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ গাফফার মোল্লা মানবজমিনকে বলেন, সিসিটিভির চাহিদা বেড়ে গেছে প্রচুর। আগের তুলনায় ডাবল বিক্রি হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা এখন খুবই প্রয়োজনীয়। শুধু ঢাকা শহরে নয়, সারা দেশে এর চাহিদা বেড়েছে। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ডিজিটাল ক্যামেরা মার্ট-এর ম্যানেজার সাদ্দাম হোসেন জানান, অ্যাপার্টমেন্ট, মার্কেট ও ফ্যাক্টরিসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো সিসিটিভি ক্রয় করছে। আগে বড় বড় শপিং মলে সিসিটিভির চাহিদা ছিল। কিন্তু এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তিগত বাসাবাড়িতে সিসিটিভির অনেক চাহিদা। 

কোলকাতা মার্কেটে সিসিটিভি কিনতে আসা রবীন্দ্র সরোবরের একজন বাড়ির মালিক সৌম্যব্রত মিত্র বলেন, নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার এখন সিসিটিভি। বিপদ-আপদ আগে থেকে জানান দিয়ে আসে না। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। এদিকে নিউ টাউনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন প্রকৌশলী অমিত্রভা সেন। পাশাপাশি তিনি ওই বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাট মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ। তিনিও এসেছেন বেশকিছু সিসিটিভি কিনতে। সেন জানান, ফ্ল্যাটের অন্যান্য মালিক মিলে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া, পুলিশ থেকেও তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু খুন-খারাপি নয়, চুরি-ডাকাতি ঠেকাতেও সিসিটিভি কাজে আসবে। কয়টি ক্যামেরা ক্রয় করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিসিটিভির বিষয়ে আমার পূর্ব কোন ধারণা নেই। তবে আমরা আমাদের ভবনের কয়েকটি স্পর্ট চিহ্নিত করেছি। এদিকে সিসিটিভির এই চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টেকনিশিয়ানদের চাহিদাও। নিশিত ভদ্র এক ফ্রিল্যান্স ব্যবসায়ী ৬ বছর ধরে সিসিটিভি কণ্ট্রাক্টে লাগিয়ে দেয়ার কাজের সঙ্গে জড়িত। তিনি নিয়মিত স্টেডিয়াম মার্কেট ও বায়তুল মোকাররমের নিচতলা থেকে অর্ডার অনুযায়ী পাইকারি দামে সিসিটিভি ক্রয় করেন। নিশিত জানান, যেকোন সময়ের চাইতে এখন তার ব্যবসার অবস্থা ভালো। কাজের চাপও অনেক বেশি। কাজ করে কুল পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আগে এমনও হয়েছে যে, পুরো মাসই বসে থাকতে হতো। কিন্তু এখন সপ্তাহজুড়ে কাজের অর্ডার। তিনি জানান, গত একমাসে পার্ক স্ট্রিটে ৫টি রেস্টুরেন্টে সিসিটিভি লাগানোর কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া, ২টি মার্কেট ও ৩টি আবাসিক ভবনে সিসিটিভি লাগিয়েছেন। নিশিত বলেন, এখনও তার হাতে প্রায় ১০টি অর্ডার ঝুলে আছে। নিশিত দেয়া তথ্যমতে, সিসিটিভি লাগান এমন ১০/১২ জনের সঙ্গে তার জানাশোনা রয়েছে। মাঝে মাঝে এমনও হয় সময়ের অভাবে একজন আরেকজনকে কাজ দিয়ে দেয়। এজন্য তাদের মাঝে কিছু বোঝাপড়ার ব্যাপারও থাকে বলে জানান নিশিত। 

শুধু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বা বাড়ি নয়। সরকারি অফিসগুলোতেও সিসিটিভি লাগানো হচ্ছে গুরুত্বসহকারে। এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যালয়েও এ কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। ভারতীয় জাদুঘরের ডিরেক্টর বি . ভেনুগোপাল জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মুভিং ক্যামেরাসহ মোট XXXটি সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে সেখানে। তিনি বলেন, সিসিটিভির মাধ্যমে কোন ঘটনা প্রতিরোধ করা যায় না। কিন্তু সহজে আইডেন্টিফাই করা যায়। বর্তমানে অনেক হাই রেজুলেশন সম্পন্ন ক্যামেরা ক্রয় করা হয়েছে। যাতে চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। কারণ, আগের ক্যামেরাগুলোতে চেহারা নির্ধারণ করা অনেক বেশি কঠিন ছিলো।

এদিকে এখন পর্যন্ত কোলকাতা (সিটি অব জয়) শহরের যে সমস্ত বাড়িতে সিসিটিভি লাগানো হয়নি, সেগুলোতে ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যামেরা লাগানোর তাগিদ দিচ্ছে কোলকাতা পুলিশ। এ ব্যাপারে কোলকাতা পুলিশ কমিশনার বলেন, কোলকাতা শহরে হাজারের অধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে পুরো কোলকাতা মহনগর এলাকাকে সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা। কিন্তু এটা সময়ের ব্যাপার। অবশ্য আমাদের প্রক্রিয়া চলমান। পর্যায়ক্রমে পুরো কোলকাতা এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে আমরা ব্যক্তি উদ্যোগটাকে সবচেয়ে বেশি স্বাগত জানাচ্ছি। এ জন্য বিভিন্ন এলাকার আবাসিক সোসাইটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছি। তাদের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। সে অনুযায়ী কোলকাতার দুই ২৪ পরগনা সোসাইটি এক সঙ্গে মিলে এসব এলাকার রাস্তাগুলোতে সিসিটিভি লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাদের। বিভিন্ন স্পন্সররা আমাদের কাজে এগিয়ে আসছে। কেআইটি থেকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের প্রথমে চিহ্নিত করা না গেলেও পরে হোটেলের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে সেই কাজে সফল হন তদন্তকারী অফিসারেরা। শর্ট স্ট্রিটে মহিলার গুলি চালনার ঘটনা সিসি টিভি ফুটেজ থেকেই জানতে পেরেছিল কোলকাতা পুলিশ। আলিপুর থানায় হামলার ঘটনায় তদন্তে বড় মাধ্যম হয়েছিল সিসি টিভি ফুটেজ। যদিও তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের সদিচ্ছা কতটা ছিল, তা নিয়েই সমালোচনার ঝড় ওঠে নানা মহলে। যদিও তত ক্ষণে সংবাদমাধ্যমে সেই ফুটেজের ছবি দেখে তদন্ত এগোতে সুবিধা হয় পুলিশের। 

উত্তর ২৪ পরগনা র শ্যামনগরের কাউগাছি মোড়ে সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় আক্কেল গুড়ুম তদন্তকারী অফিসারদেরও। ১৬টি তালা ভেঙে দোকানে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। বহু টাকার জিনিস নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু যাওয়ার আগে নিয়ে গিয়েছে সিসিটিভি, ক্যামেরাও। যা দেখে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলতে বাধ্য হলেন, “অপরাধীরা অতি চালাক। অপরাধের কোনও চিহ্ন রাখবে না বলেই সিসি ক্যামেরা, টিভি নিয়ে পালিয়েছে। তবে তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বেই।” কিন্তু ক্যামেরা খুলে নিয়ে গেলেও ডি ভি আর এর মধ্যে থাকা প্রতিচ্ছবি অপরাধ সনাক্ত করণে সাহায্য করেছে | বর্তমান এ ব্যবসায়ীরা প্রতিচ্ছবি ক্লাউড / এন এ এস এর মধ্যে সংরখ্যিত রাখতে শিখে গেছে অর্থাৎ অপরাধীরা ডি ভি আর / এন ভি আর তুলে নিয়ে গেলেও অপরাধ সনাক্ত করণ সম্ভব | 

বীরভূম : অপরাধমুক্ত শহর গড়তে সিসিটিভিতে মুড়ছে বীরভূম জেলার নলহাটি পৌরসভা| নিরাপত্তার চাদরে মুড়তে গোটা নলহাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ ছয় জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু করে দিল নলহাটি পৌরসভা | অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে | শহরবাসী কে নিরাপত্তা দিতে শহর কে উন্নত প্রযুক্তি সি সি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলার উদ্যোগ নিলো নলহাটি পৌরসভা | 

পৌর সভার ১৬টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন জায়গায় এই সিসি ক্যামেরা লাগানো হছে| বিশেষ করে শহরে প্রবেশ পথ জাতীয় সড়ক মন্দির বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয় .প্রায় ৪২টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে | এর ফলে শহর বাসীকে যেমন নিরাপত্তা দেওয়া যাবে ঠিক তেমন চুরি ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজ ও কমবে বলে পৌরপতির দাবি | পৌর সভার এই কাজ কে স্বাগত জানিয়েছেন শহর বাসী| 

সম্প্রতি, নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং জানান নলহাটি থানার পুলিশ কে নিয়ে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম করা হবে একটি এর ফলে শহরে অপরাধ মূলক কাজ অনেক কমবে| 

বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার প্রথম কোনও শহরে এত বড় মাপের সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হল। সোনামুখী পৌরসভা ও সোনামুখী থানার যৌথ উদ্যোগে সোনামুখী শহরে বসানো হল এই সিসিটিভি ক্যামেরা। 
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার একটি ছোট্ট শহর সোনামুখী। ছোট্ট হলেও খুবই নামকরা এই পৌর শহরটি। ছোট্ট হলেও বেশ জনবহুল এই শহর। স্কুল, কলেজ, অফিস, ব্যাংক সবই রয়েছে এই শহরটিতে। শহরের মাঝে একাধিক মোড় দিয়ে বাঁকুড়া, দুর্গাপুর, বিষ্ণুপুর, বর্ধমান, পনাগড় বহু দূরপাল্লার বাস সহ বিভিন্ন রুটের গাড়ি ছুটছে এই শহরের উপর দিয়ে। দিন দিন বাড়ছে শহরের জনবসতি তেমনি বাড়ছে দোকানদারের সংখ্যা। এমনিতেই শহরটি খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এবং রাস্তাঘাট অতন্ত্য সংকীর্ণ। সেই কারণে সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত বেশ জমজমাট এই প্রাচীন শহর। সব দিক বিচার করে এই শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে এগিয়ে এল সোনামুখী পৌরসভা ও সোনামুখী থানা। সরকারি আর্থিক সহায়তায় শহরের মোড় গুলিতে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন জায়গায় ও ওয়ার্ডের বেশ কিছু রাস্তায় বসানো হয়েছে 24 টি সিসিটিভি ক্যামেরা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার করা হয়েছে এই সিস্টেমে। যাতে আগামী দিনেও আরও ক্যামেরা বাড়ানোর যায়। আগামীদিনে পুলিশ ও পৌরসভার এই সংখ্যাটা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলোর কন্ট্রোলরুম সোনামুখী থানায় করা হয়েছে। সেখানেই মনিটরের মাধম্যে নজরদারি চালাবে সোনামুখী থানার পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীরা। সোনামুখী থানার পুলিশের নজরদারীতে থাকবে এই পুরো বিষয়টি। পুলিশ ও পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে শহরবাসী। পাশাপাশি এটাও দাবি করেছেন শহরের দোকানদার থেকে সাধারণ নাগরিক এটার মনিটরিং যাতে ঠিক ঠাক হয়। 

সোনামুখী পৌরসভার চেয়ারম্যান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শহরের মানুষের নিরাপত্তার জন্যই এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন এটা পরিচালনা করছে। ট্রায়াল রানের সময়ই আমরা এর সুফল পেয়েছি আগামীদিনে এর থেকে সুফল পাবো।” 

বাঁকুড়া জেলা শহরে কয়েকটি জায়গায়, শহরের ব্যাস্ততম রাস্তায় ও বড়জোড়ায় লাগানো রয়েছে এই সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়ায় অনেকে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে নিজের বাড়িতে বা দোকানে ক্যামেরা লাগিয়েছেন নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে। এত বড় মাপের সারা শহর জুড়ে এতগুলো ক্যামেরা লাগানো এই প্রথম সোনামুখী শহরে। ইতিমধ্যে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ কিছুদিন আগে বাঁকুড়ার শহরে ঢোকার মুখে লাগানো ক্যামেরার মাধ্যমে আন্তঃরাজ্য লরি পাচার চক্রের কিনারা করেছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা জানিয়েছেন, ”শহরে মানুষের নিরাপত্তা যেমন বাড়ছে তেমনি পুলিশের এই ক্যামেরাগুলো বিভিন্নভাবে উপকারে আসছে। যানজট, ক্রাইম, সমাজবিরোধী কাজকর্ম, ইভটিজিং এই বিষয়গুলো রোধ করা যাবে। 

নিরাপত্তার কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে রবীন্দ্র সরোবরে । রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘নগরোন্নয়ন দফতর এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য কলকাতা পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। নগরোন্নয়ন দফতর অর্থও বরাদ্দ করেছে। আশা করা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই এই কাজ শুরু হবে।’’

কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ পূর্ব) গৌরব শর্মাও বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবর এবং তার আশপাশে কয়েকটি জায়গায় নিরাপত্তাজনিত কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’’ এই প্রকল্পের জন্য লাগবে প্রায় ছ’কোটি টাকা। 

কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ বা কেআইটি (সম্প্রতি কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র সঙ্গে মিশে গিয়েছে) সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে প্রাতঃভ্রমণের সময়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বেশ কিছু যুবক। এর পরেই সরোবরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেআইটি কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনাও হয়। সিদ্ধান্ত হয়, কলকাতা পুলিশ সমীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে, সরোবর এবং সংলগ্ন এলাকায় কোথায় কত সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে। কলকাতা পুলিশ সমীক্ষা করে জানিয়েছিল, ২০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে। যদিও এতদিন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয়নি । কলকাতার একাধিক গয়নার দোকানে চুরি, কেপমারির ঘটনায় সিসি টিভির ফুটেজ অপরাধীকে ধরতে সাহায্য করেছে। এ ছাড়াও, ইদানীং শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় লাগানো সিসি টিভি থেকে দুর্ঘটনার তদন্তে পুলিশ যথেষ্ট সাহায্য পেয়ে থাকে। 

রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে সম্প্রতি একজন অটোচালক নিহত হওয়ার পর সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন ওঠে। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, অর্থের সমস্যার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে দেরি হয়েছে। এছাড়াও, সিসিটিভি’র নজরদারির জন্য প্রয়োজন একটি ঘরের। সরোবরে নতুন করে ঘর তৈরি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। ফিরহাদ জানান, বর্তমানে নজরুল মঞ্চের কাছে একটি ঘর চিহ্নিত করা হয়েছে। 

খুব সাধারণ মানুষের সে ব্যাপারে এখনও তেমন সচেতনতা দেখা না গেলেও ব্যবসায়ীরা ও আবাসনের মানুষের সচেতন হয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি টিভি বসানোর পক্ষপাতী অনেকেই। যা বহু ক্ষেত্রে চুরি-ডাকাতি ঘটে গেলে তদন্তের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠছে পুলিশের কাছেও। এর আগে একাধিক বড় ঘটনায় এ ভাবেই সাফল্য পেয়েছে পুলিশ।

সোনার দোকানে ডাকাতি রুখতে এবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রতিটি পুরসভা এলাকায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতার পাঠ নিতে পথে নামছে রাজ্যের শাসকদল। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যেক দোকানে সিসি টিভি লাগানো, বড় দোকানগুলিতে সিকিউরিটি এলার্ম লাগানো ইত্যাদি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে ভল্টে হাত দিলে নিজে থেকেই এলার্ম বেজে ওঠে। এমনকী, দোকানে আচমকা ডাকাত ঢুকে পড়লে কর্মরত কর্মীরা কী করবেন, সে ব্যাপারেও সচেতন করা হচ্ছে। তবে অপরাধ ঠেকাতে শাসকদলের উদ্যোগে এহেন সচেতনতামূলক কর্মসূচি কার্যত বিরল ঘটনাই বলতে হবে।

সোদপুর, খড়দহ, বরানগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর প্রভৃতি জায়গায় একের পর এক সোনার দোকানে ডাকাতির পর প্রথম এই ধরনের পদক্ষেপ করে হাবড়া থানার পুলিশ। তারপরই শাসকদলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জেলার ২৫টি পুরসভাতেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৯ এপ্রিল হাবড়া শহরে সমস্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে নিয়ে বৈঠক করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেখানে হাবড়া থানার পুলিশও উপস্থিত ছিল। জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বনগাঁ পুরসভা এলাকায় সমস্ত সোনার দোকানদারকে নিয়ে ওই একই ধরনের বৈঠক হয়েছে। 

ওই বৈঠকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে, প্রত্যেক দোকানে সিসিটিভি লাগাতেই হবে। কারণ, সিসিটিভি’র ফুটেজ অপরাধীদের চিহ্নিত করতে খুবই সাহায্য করে। শুধু ডাকাতি নয়, ছোট চুরির কিনারা করতেও সিসিটিভি’র গুরুত্ব রয়েছে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের বড় সোনার দোকান রয়েছে, তাঁরা সিসিটিভি তো লাগাবেনই, পাশাপাশি দোকানের ভিতর সিকিউরিটি সিস্টেমও চালু করতে হবে। ভল্ট ভাঙা তো দূরের কথা, দুষ্কৃতীরা ভল্ট স্পর্শ করলেই যাতে এলার্ম বেজে ওঠে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি, আচমকা যদি ডাকাতদল ঢুকে পড়ে, তাহলে কর্মীরা সেই অবস্থায় কী করবেন? মাথা ঠান্ডা রেখে বুদ্ধি বের করা, এলার্ম বাজানোর চেষ্টা করা, আগে থেকে ইশারায় কথা বলার অভ্যাস তৈরি করা প্রভৃতি বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, আমাদের জেলায় ২৫টি পুরসভাতেই আমরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এমন বৈঠক শুরু করেছি। সেখানে পুরসভা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাও থাকছেন। হাবড়া পুরসভা দিয়ে এই কাজ শুরু হয়েছে। আগামী সোমবার বসিরহাট পুরসভা এবং বাদুড়িয়া পুরসভা এলাকায় বৈঠক হবে। আগামী মঙ্গলবার দমদম, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম পুরসভায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। আমরা দোকানদারদের অনুরোধ করছি, সিসিটিভিসহ সিকিউরিটি এলার্ম সিস্টেম চালু করার জন্য। পাশাপাশি, পুলিশের পক্ষ থেকে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। যাঁদের সিসিটিভি ছিল না, তাঁরা বৈঠকের পরই তা লাগাতে শুরু করে দিয়েছেন। পুলিশকে আরও বলা হয়েছে, সোনার দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করার জন্য বিশেষ মোবাইল ভ্যান চালু করতে। যেমন, ব্যাংকগুলির জন্য স্পেশাল মোবাইল ভ্যান রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমরা আশাকরি, সকলে মিলে এই ধরনের উদ্যোগ নিলে এবং সচেতন হলে ডাকাতির মতো অপরাধ অনেকটাই ঠেকানো যাবে। 

মোবাইলে সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণ: বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনেক দূরত্বে গিয়েও সিসিটিভি নিয়ন্ত্রিত এলাকা দেখা যায় খুব সহজে। ওয়াই ফাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যে কোন ডিভাইসে বসেই কম্পিউটার অথবা মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসব ক্যামেরা রয়েছে ১.৩ মেগাপিক্সেল থেকে শুরু করে ৮ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত রেজ্যুলেশন। এবং ৬০০ টিভিএল থেকে শুরু করে ৯০০ টিভিএল পর্যন্ত সিসি টিভি। স্মল সলিউশন থেকে শুরু করে এক্সট্রা লার্জ সলিউশন রেঞ্জের ডিভিআর এবং এনভিআরও রয়েছে। সি এম এস সফটওয়্যারের মাধ্যমে একাধারে ৫ হাজার আইপি ক্যামেরা মনিটর ও নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা রয়েছে।

শুধু বাংলা নয়, প্রতি শহরের বাসাবাড়ি তে সিসি টিভি থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ | আজ প্রতি ঘরে পারিবারিক অশান্তি বেড়েই চলেছে | নারী কেন্দ্রিক হউক অথবা পুরুষ কেন্দ্রিক, একমাত্র ভিডিও ফুটেজ আপনাকে দিতে পারে সঠিক বিচার | এবং সেই ক্যামেরা রাখতে হবে গোপন ভাবে | সমীক্ষা জানাচ্ছে দেশের 98% পুরুষ পারিবারিক নির্যাতনের স্বীকার হয়- সেটা হতে পারে আর্থিক শোষণ, নিত্য অবমাননা,শারীরিক নির্যাতন, বিশ্বাসঘাতকতা, মিথ্যা মামলার হয়রানি , খাদ্যাভাব - ইত্যাদি প্রকারের।

বিবাহে (ভারতে) পণ এর দাবি যা মেয়ে পক্ষ থেকেও হয়, হয়রাণিতে যত মানুষ প্রতি বছর আত্মহত্যা করে তার 75% পুরুষ।  পরিবারে (ভারতে) যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুদের 60% পুরুষ।
সরকারী হিসেবে মহিলাদের কীর্তি, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো তে RTI করে জানতে পারেন |

একথা অনস্বীকার্য যে আমাদের সমাজেও প্রকাশে কিংবা লোকচক্ষুর অন্তরোলে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। বিভিন্ন এলাকায় এমন ও আছে প্রায় প্রতিরাতে স্ত্রীর হাতে মারধর খেতে হয় স্বামী নামের সেই পুরুষটিকে। বেচারা স্বামী লোক লজ্জা আর সমাজপতিদের ভয়ে মুখ খোলতে পারছে না। এভাবে কত শত ঘটনা ঘটছে সারা দেশে তার নির্ধারিত পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও প্রতিদিন খবরের কাগজের পাতা উল্টালে চোখে পড়বেই স্ত্রী কর্তৃক স্বামী তালাক, মামলা-হামলা, পরকীয়ার বলি, আবার অনেক ঘটনা চাপাও পড়ে যায়। এমনি ভাবে শত শত পুরুষ প্রতিদিন প্রতিনিয়ত স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না। আত্মমর্যদা, সামাজিক লোকলজ্জা আর কোর্ট কাচারীর ভয়ে মুখ খুলে বলতে পারছেন না তার নির্যাতনের কথা। কিন্তু একজন নারী ইচ্ছে করলে এ ঘটনা সাজিয়ে থানা কিংবা আদালতে মামলা করতে পারতো। এছাড়া বর্তমান সময়ে একটি পরিবারকে ধংস করতে বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতন মামলাকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। কারণ মামলাটি সহজে করা যাচ্ছে এবং এ মামলাটি সাধারণত জামিন অযোগ্য। কিন্তু ইচ্ছে করলেই একজন পুরুষ নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থানায় গিয়ে মামলা করতে পারছেন না। 

সমাজবিজ্ঞানী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বর্তমান সময়ে দাম্পত্য জীবনে ভালবাসার বন্ধন আগের চেয়ে অনেক হালকা হয়ে উঠেছে। মূল্যবোধের অবক্ষয়, নৈতিক স্খলন, লোভ-লালসা, উচ্চ বিলাসিতা, পরকীয়া, মাদকাসক্তি, অর্থনৈতিক বৈষম্য, স্বাবলম্বী হওয়া, বিশ্বায়নের ক্ষতিকর প্রভাব, অবাধ ভিনদেশি সাংস্কৃতিক প্রবাহসহ নানা কারণেই এমনটা ঘটছে। যার চরম পরিণতি হচ্ছেÑ সংসারের ভাঙন ও নির্যাতন। যেখানে ভুক্তভোগী উভয়ই। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির অনেকেই প্রতিনিয়ত ভুগছেন পারিবারিক যন্ত্রণায়। নির্যাতিত নারীর পাশে সমাজের অনেকেই সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন। কিন্তু পুরুষশাসিত এ সমাজে পুরুষও যে নির্যাতিত হতে পারে তা ভাববার অবকাশ যেন নেই কারোরই। ফলে আড়ালেই থেকে যাচ্ছে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনাগুলো। ফলে দিনের পর দিন বাড়ছে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা।

তাদের মতে, প্রতিনিয়ত স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না অনেক পুরুষ। সন্তানের ভবিষ্যৎ, সামাজিক মর্যাদা রা, লোকলজ্জা, জেল-পুলিশ আর কোর্টকাছারির ভীতির কারণে বাধ্য হয়ে স্ত্রীর নির্যাতন নীরবে সহ্য করেও মানিয়ে নিচ্ছেন তারা। মুখ খুলে বলতে পারছেন না নির্যাতনের কথা। কিন্তু একজন নারী আইনি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ইচ্ছে করলেই ঘটনা সাজিয়ে পুরুষের বিরুদ্ধে থানা কিংবা আদালতে সহজেই নারী নির্যাতনের মামলা ঠুকে দিতে পারছেন। কিন্তু ভুক্তভোগী হয়েও একজন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়ে থানায় গিয়ে সহজে অনেক সময় মামলা করতে পারছেন না। ফলে আদালতের দারস্থ হচ্ছেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে অনেকে আবার নিত্যসঙ্গী করেছেন পারিবারিক অশান্তি। বিয়ে একটি যৌথ প্রকল্প, এই প্রকল্পে দুজনের বোঝাপড়া থাকা খুবই জরুরি। তা না হলে এর প্রভাব সন্তানদের ওপরও পড়তে পারে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। 

"তাই নারী বা পুরুয়ের জন্য আলাদা অধিকার নয়- চাই সমান অধিকার। সর্বত্র সমান অধিকার প্রতিষ্টা করতে হলে আইনের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ আইন থাকলে পুরুষের জন্য পৃথক বিশেষ আইন চাই”। সচেতন মহলেরও দাবী, নারী নির্যাতনের পাশাপাশি তৈরি করা হউক পুরুষ নির্যাতন আইন আর দূর করা হউক নারী-পুরুষের মাঝে বৈষম্যতা। তা না হলে সারা দেশে যে পরিমানে পুরুষ নির্যাতনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এক সময় তাহা ব্যাপক আকার ধারণ করবে তখন সরকার আইন করেও পুরুষ নির্যাতন কমাতে পারবেনা।


3 comments: